ক্যাড অ্যান্ড ক্যাম

এসএসসি(ভোকেশনাল) - মেকানিক্যাল ড্রাফটিং উইথ ক্যাড-২ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) | | NCTB BOOK
1

ক্যাড হল কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন (Computer Aided Design) এবং ক্যাম হল কম্পিউটার এইডেড ম্যানুফেকচারিং (Computer Aided Manufacturing), ইহা ডিজিটাল কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট নকশা প্রনয়ন ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি প্রকৌশলগত পরিভাষা বা প্রযুক্তিবিদ্যা। এ প্রযুক্তিবিদ্যা ডিজাইন এবং উৎপাদনের নিমিত্তে সর্বদা পরিবর্তনশীল। সর্বোপরি কম্পিউটারাইজড শিল্পকারখানাগুলো ক্যাড/ক্যাম প্রযুক্তি নির্ভর।

কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন (ক্যাড )- কে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়ে থাকে যে, যখন কম্পিউটারকে কোন কিছু সৃষ্টি বা তৈরি, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বিশ্লেষণ অথবা ডিজাইনের পরিপূর্ণ বিকাশে ব্যবহার করা হয়, তখন তাকে কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন বলে। ক্যাড সফটওয়্যার এ কম্পিউটার গ্রাফিক্স বাস্তবায়নে লক্ষ্যে কম্পিউটার প্রোগ্রাম থাকে এবং এই প্রোগ্রাম ব্যবহারে প্রকৌশল কর্মকান্ড পরিচালনায় সুবিধা পাওয়া যায়। উদাহরন স্বরুপ এই প্রোগ্রাম ব্যবহারের মাধ্যমে যন্ত্রকৌশল কার্যকারিতা, এবং নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল ইত্যাদি কার্য অতি নিপুনভাবে সম্পাদন করা যায়।

 

ক্যাড-এর ভূমিকাঃ

১। কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় অতি দ্রুত এবং অধিকতর নিখুত। 

২। ক্যাড এর তৈরি ডিজাইন এবং ড্রাফট খুবই সহজ এবং নানাবিধ গাঠনিক সুবিধা এতে বিদ্যমান থাকে বিধায় সহজে ডিজাইন করা যায় বা ডিজাইন পরিবর্তন করা যায় । 

৩। ক্যাড-এর সাহায্যে ডাইমেনশন, পরিবর্তন এবং দূরত্ব তুলনা করা খুবই সহজ কাজ। 

৪। ক্যাড তৈরি যে কোন কম্পোনেন্ট এর ডিজাইন বা ড্রইং পুনঃকরন প্রয়োজন পড়ে না আর যদিও পরে তবে সেটা অধিকতর সহজ এবং কম সময়ের মধ্যে সম্ভব হয় । 

৫। জ্যামিতিক হিসাবনিকাশ খুব নিখুঁতভাবে সম্পাদন করা হয়ে থাকে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে থাকে। 

৬। ডিজাইন ড্রইং বা মডেল এর পরিবর্ধন বা যেকোন পরিবর্তন খুবই সহজ কাজ হয়।

 

ক্যাম এর সুবিধা 

১। ক্যাম শিল্প প্রতিষ্ঠানের MASS প্রোডাকশন এবং ব্যাচ প্রোডাকশন উভয়ক্ষেত্রেই সফলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। 

২। বৃহৎ আকারের উৎপাদনের জন্য ( যেমন অটোমোবাইল) উৎপাদনের পরিমান হয় অনেক বেশি এবং এক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের মেশিন ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দ্রব্যের মূল্যমান সচরাচর প্রাপ্ত সীমারেখা থেকে অনেক নিচে আনায়ন করা হয়। 

৩। দ্রব্যের উৎপাদন ব্যয় তুলনামূলক অধিকতর হলেও বিশেষ ধরনের যন্ত্রপাতি যেমন জিগ ফিক্সচার ব্যবহার করে উৎপাদন ব্যয় নির্দিষ্ট সীমারেখায় ধরে রাখা সম্ভব। 

৪। ক্যাম সব ধরনের উৎপাদনের ক্ষেত্রেই ব্যবহারযোগ্য। 

৫। উৎপাদনের গতিশীলতা আনয়ন, মান নিয়ন্ত্রন ও ডিজাইন উন্নয়ন ইত্যাদি নিশ্চিতকরনে ক্যাম- এর ভূমিকা সর্বাগ্রে তুলনীয়। 

৬। প্রডাকটিভিটি বৃদ্ধিতে ক্যামের গুরুত্ব রয়েছে। 

৭। বৃহৎ কার্য নমনীয়তায় ক্যামের গুরুত্ব রয়েছে। 

৮। গ্রহনযোগ্যতা বাড়ায় । 

৯। মেরামত কাজে কম সময় লাগে ৷ 

১০। উন্নত ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রন করে থাকে ।

 

প্রোডাক্ট সাইকেল

একটি উৎপাদনশীল দ্রব্য তৈরি করতে কিছু পূর্ব পরিকল্পনা প্রয়োজন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কোন প্রোডাক্ট ফ্রক উৎপাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদার প্রাক্কলন পরিকল্পনা এবং সা লাভ সর্বোপরি সর্বোচ্চ উৎপাদন প্রনালির ধারাবাহিক নকশা প্রনয়ন করে ফনাযথ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করে। ধারাবাহিক কার্যক্রম সংবদিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার চক্রকে প্রোডাক্ট সাইকেল বলে। নিম্নে প্রডাক্ট সাইকেল একটি চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো।

ক্যাড সিস্টেম এলিমেন্টস-এর বর্ণনাঃ

বর্তমানে আধুনিক কম্পিউটার ডিজাইন পদ্ধতির দ্বারা সম্পাদিত বিভিন্ন ক্যাড সিস্টেম এলিমেন্টস ডিজাইন সম্পর্কিত কাজকে চারটি এলিমেনেট ভাগ করা হয়েছে। যথা-

 ১। জিওমেট্রিক মডেলিং । 

২। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ।

৩। ডিজাইন পুনরাবৃত্তি এবং মূল্যায়ন । 

৪। স্বয়ংক্রিয় ড্রাফটিং ।

জিওমেট্রিক মডেলিংঃ কম্পিউটার এইডেড ডিজাইনে জিওমেট্রিক মডেলিং হল একটি অবজেক্ট এর জ্যামিতিক সুসংগত গাণিতিক বর্ননা। গাণিতিক বর্ননার মাধ্যমে ক্যাড সিস্টেমে সিপিইউ হতে সিগনাল এর মাধ্যমে অবজেক্ট এর দৃশ্য প্রদর্শন এবং প্রক্ষেপণ করে থাকে ।

প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণঃ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন প্রকার বিশ্লেষণ প্রয়োজন। এ ধরনের বিশ্লেষণ স্ট্রেস স্ট্রেইন ক্যালকুলেশন, হিট ট্রান্সফার হিসাবকরন, অথবা ডিফারেনসিয়াল সমীকরণ সিস্টেমের গতিশীল বৈশিষ্ট্যেও বর্ননার জন্য প্রয়োজন বিধায় একে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ বলে ।

ডিজাইন পুনরাবৃত্তি ও মূল্যায়নঃ গ্রাফিক্স টার্মিনালের মাধ্যমে ডিজাইন নির্ভুলতা পরিমাপ করা হয়। ডিজাইনার ডিজাইনের একটি অংশকে জুম ইন বা জুম আউট করার মাধ্যমে গ্রাফিক্স স্ক্রিনে পরিবর্ধন করে সরাসরি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে সঠিকতা সম্পর্কে পরিজ্ঞাত হয়।এই পূর্ন প্রসেসকে ডিজাইন পুনরাবৃত্তি ও মূল্যায়ন বলা হয়ে থাকে।

স্বয়ংক্রিয় ড্রাফটিংঃ স্বয়ংক্রিয় ড্রাফটিং সরাসরি ক্যাড ডাটা বেস হতে হার্ড কপি ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং তৈরির সাথে সম্পৃক্ত। বর্তমানে, কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন বিভাগ ড্রাফটিং এর স্বয়ংক্রিয়তা ক্যাড প্রক্রিয়ার নির্ভুলতা উদঘাটনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই ক্যাডে স্বয়ংক্রিয় ড্রাফটিং প্রয়োজন।

নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল প্রযুক্তি বিদ্যার নীতি (Principles of NC technology )

নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল মেশিনের প্রয়োজনীয় উপকরন অনেক বছর হতেই স্থিরকৃত আছে। স্টোরেড প্রোগ্রাম গঠন ও ব্যাখ্যাকরন মেশিন কন্ট্রোল ইউনিট নামে পরিচিত যা ইনস্ট্রাকশন অনুযায়ী অ্যাকচুয়েশন ডিভাইস এর মাধ্যমে একটি মেশিনকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে। যাহা নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল প্রযুক্তি বিদ্যার নীতি বা Principles of NC technology হিসাবে পরিচিত।

 

 

Content added By
Promotion